বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ুর
পরিবর্তনের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিস্ময়কর ও ব্যাপক প্রভাব পড়তে
দেখা যায়। জলবায়ুর পরিবর্তন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং ‘থ্রেট
মাল্টিপ্লায়ার’ উভয়েরই মূল কারণ। জলবায়ুর পরিবর্তন বিদ্যমান মানসিক
স্বাস্থ্য সমস্যার অবস্থাকে আরো খারাপ করে দেয় বলে জানিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী
ডাঃ লাইস ভ্যান সাস্টেরেন। তিনি ম্যাসাচুসেট এর বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের
হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এর সেন্টার ফর হেলথ এন্ড দ্যা
গ্লোবাল এনভাইরনমেন্ট এর একজন মনোবিজ্ঞানী।
বিভিন্ন অর্গানাইজেশন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাডভোকেসি
গ্রুপের বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনায় ভ্যান সাস্টেরেন জলবায়ুর পরিবর্তন ও
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেন।
ভ্যান সাস্টেরেন বলেন, জলবায়ু এবং আবহাওয়ার চূড়ান্ত
রকমের পরিবর্তন এবং উচ্চমাত্রার আগ্রাসনের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়ে তথ্য
উপস্থাপন করেন গবেষকেরা। সায়েন্স জার্নালে ২০১৩ সালে প্রকাশিত গবেষণা
প্রতিবেদনে তিনি বলেন, তাপমাত্রার
বৃদ্ধি এবং চূড়ান্ত রকমের বৃষ্টিপাতের সাথে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভিন্ন
দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্পর্ক বিদ্যমান।
ভ্যান সাস্টেরেন লাইভ সায়েন্সকে বলেন, তাপমাত্রার
বৃদ্ধি এবং আগ্রাসনের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা
হচ্ছে – উচ্চ তাপমাত্রা শরীরের অ্যাড্রেনালিন এর মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা
বিবাদ বা আগ্রাসনের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
তার কথোপোকথনে তিনি বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধির (যা হয়ে
থাকে তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে) সাথে সাথে স্নায়বিক ও মানসিক সমস্যার
ঝুঁকি বৃদ্ধির সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, যখন কোন মানুষ বায়ু
দূষণের ফলে সৃষ্ট কোন নির্দিষ্ট বস্তুকণা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করেন তখন
তা সেই ব্যক্তির অলফ্যাক্টরি স্নায়ুতে প্রবেশ করে এবং তা স্নায়ুতে
ইনফ্লামেশন সৃষ্টি করে।
আলঝেইমার্স ও জ্ঞানীয় বৈকল্যের সমস্যাযুক্ত মানুষসহ সকল বয়সের মানুষেরই নিউরাল ইনফ্লামেশন হয়, বলে জানান তিনি।
দ্যা আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশন এর রিপোর্ট এর
মতে যখন গর্ভবতী নারীরা বায়ু দূষণের সংস্পর্শে থাকে তখন তাদের সন্তানের
মধ্যে অনেক বেশি উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্ণতার লক্ষণ দেখা যায়।
ভ্যান সাস্টেরন বলেন, গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, বাতাসের
মান যখন খুবই খারাপ থাকে তখন প্যানিক অ্যাটাক এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেন
এমন রোগীর সংখ্যা বেশি ইমারজেন্সি রুমে বেশি দেখা যায়।
কিন্তু সকল ধরনের জলবায়ুর পরিবর্তনে স্বাস্থ্যের ওপর
প্রভাব সহজেই গবেষণায় নির্ণয় করা যায় না বলে জানান তিনি। তিনি এটাও বলেন
যে, ‘সবকিছু আসলে পরিমাপ করা যায় না’। বরং জলবায়ুর পরিবর্তনের নেতিবাচক
প্রভাবের ফলে সামাজিক স্তরে মানসিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে যা অতিক্রম করা বেশ
কঠিন।
ভ্যান সাস্টেরেন একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন যেখানে
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে অস্ট্রেলিয়ার ১৭ বছরের একটি ছেলের মধ্যে এমন
সমস্যা হতে দেখা যায় যে সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। যে চিকিৎসকেরা
তার চিকিৎসা করেন তারা একে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ডিলুশন’ বা ‘জলবায়ু পরিবর্তনের
বিভ্রম’ নামে অবিহিত করেন এবং এটি ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া এন্ড নিউজিল্যান্ড
জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত হয়। এই ছেলেটি পানি পান করতে অস্বীকৃতি
জানায়, কারণ সে বিশ্বাস করেছিলো যে সে পানি পান করলে খরা পীড়িত দেশে লক্ষ
লক্ষ লোক মারা যাবে পানির অভাবে।
তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া
প্রয়োজন। যদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তাহলে এরকম অন্য শিশুদের মানসিক
স্বাস্থ্যের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র : লাইভ সায়েন্স
Ads
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
-
I know, as a blogger, you care your blog design, template or theme you use on your blog. It's reflecting your personality in a way, don...
-
When I decided to write a story about the origins of Hong Kong bubble waffles -- also known as "egg waffles" -- I thought it would...
-
Introduction :- The term digital marketing was first used in the 1990s,but digital marketing has roots in the mid-1980s, when the SoftAd ...
-
The higher your knowledge basic regarding the regulation and private damage circumstances, the better ready you may be. You don't w...
No comments:
Post a Comment