Ads

Saturday, 19 September 2015

জীবন রক্ষার হাতিয়ার ফেসবুক!!!!



সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমানে আমাদের জীবনের একটা খুব বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এর অনেক অপকারিতা থাকলেও উপকারিতার পাল্লা একেবারে কম নয় আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই বেশ কিছু সযোগ সুবিধা নিয়ে এসে এটি কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ আছেন যাদের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা আর দশটা মানুষের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে কেন? আসুন জেনে নিই মানুষের জীবনে এখন অব্দি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর করা অভূতপূর্ব আর অসাধারণ কিছু জীবন রক্ষা করা কাজ
. ক্রিস থমাস
সাবেক আর্মি কর্মকর্তা ক্রিস থমাস তখন একেবারেই প্যারালাইজড। হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারেননা একদম। এমন সময় একদিন বাথরুমে যেতে গিয়ে দেয়ালের পাশে রাখা তাকগুলোতে আটকে পড়েন তিনি আর সরতে গেলে পুরো শোকেসটি পড়ে যায তার পায়ের ওপর। হুইলচেয়ারের ভেতরে প্রচন্ড ভারী একটি শোকেসের নীচে আটকে পড়েন তিনি। চলাফেরার কোন ক্ষমতা ছাড়াই। চিৎকার করে সাহায্য চান তিনি প্রথমে। সাড়া মেলেনা। কাউকে ফোন করবার সামর্থ্য না থাকলেও ফেসবুক চালু ছিল তখন তার ফোনে আর তিনি ছিলেন মোবাইলের কাছেই। তক্ষুণি সবাইকে জানান তিনি তার সমস্যার কথা আর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বিপদের কথা শুনে তৎক্ষনাৎ বাসায় ছুটে আসে ১২ জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বন্ধু। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ক্রিসকে। একদিন পর সুস্থ হয়ে ওঠেন ক্রিস
. রাইলি টেইলর
সেবার তিন বছরের মেয়ে রাইলিকে পরীর মতন সাজিয়ে গুছিয়ে ছবি তোলেন টেরি টেইলর আর সেটাকে আপলোড করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকগুলো লাইক আর কমেন্টস আসে ছবিতে। কিন্তু মন্তব্যকারীদের ভেতরে দুজনের মন্তব্য ছিল বাকি সবার চাইতে ভিন্ন। আর সেটার কারণ রাইলির চোখ নিয়ে তাদের দুঃশ্চিন্তা। টেরিকে জানান তারা রাইলির চোখে কোন একটা সমস্যা আছে। বন্ধুদের কথা শুনে তক্ষুণি চিকিৎসকের কাছে ছোটেন টেরি আর জানতে পারেন তার মেয়ের চোখে রয়েছে মারাত্মক এক সমস্যা যার কারণে যেকোন সময় অন্ধ হয়ে যেতে পারে সে। তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। ফলে পুরোপুরি সুস্থ করা সম্ভব না হলেও একেবারে অন্ধ হয়ে যাবার হাত থেকে বেঁচে যায় রাইলি
. লইস শেলটন
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারীর ২৬ তারিখে লইস শেলটান নামের এক বৃদ্ধা বাড়ির রান্নাঘরে ঢোকার সময় হঠাৎ পড়ে যান এবং আবিষ্কার করেন যে তিনি আর উঠতে পারছেননা। কোন কথাও বলতে পারছেন না। শেলটনের ফোন অন্য রুমে থাকলেও রান্নাঘরের পাশেই ছিল তার কম্পিউটার। সেখানে ফেসবুক তখন চালু ছিল। কোনরকমেসাহায্য, আমার সাহায্য দরকার পড়ে গিয়েছিকথাটা লেখেন শেলটন ফেসবুকে। তার ছেলের বউ সেটা পড়ে যোগাযোগ করেন শেলটনের বাসস্থানের পাশের ঘরে থাকা প্রতিবেশীদের সাথে। প্রতিবেশীরা দ্রুত এসে শেলটনকে নিয়ে যান হাসপাতালে
. অক্সফোর্ডশায়ারের ছেলেটি
২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশাযারে বসবাসরত এক ১৬ বছর বয়স্ক ছেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয় মেরীল্যান্ডে বাসরত এক কিশোরীর। একদিন হঠাৎ ছেলেটি জানায় যে সে আত্মহত্যা করতে চলেছে এবং এটাই তার শেষ কথা। উদ্বিগ্ন হয়ে মাকে কথাটা বলে মেয়ে। মায়ের পরামর্শে ফোন করে পুলিশে। পুলিশ ফোন করে হোয়াইট হাউজে। সেখান থেকে তাদেরকে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয় ওয়াশিংটনের ব্রিটিশ অ্যামবাসিতে। শুধু ছেলেটার নাম আর তার স্কুলের নামকে নিয়ে খুঁজে বের করে পুলিম ছেলেটিকে। তখন অতিরিক্ত অষুধ খেয়ে প্রায় মরার পথে ছেলেটি। সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং শেষ অব্দি বেঁচেও যায় সে
. রিক ফসনট
জেনিনে পেপি স্যানসম অনেকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিক ফসনট নামের মানুষটিকে খুঁজছিল। ছোট্টবেলায় ১০ বছর বয়সী স্যানসম তার বন্ধুদের সাথে সাঁতার কাটতে গেলে বেশ কথা হত তার রিকের সাথে। তবে এরপর আর দেখা হয়নি তাদের। কিন্তু রিককে পেতে বেশ সমস্যা হল স্যানসমের। কেন হবেনা? রিক তো তখন হাসপাতালে। তার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একজন দাতা খুঁজছে রিক তখন বাঁচার জন্যে। ফেসবুকে রিকের সমস্যার কথা জেনে সাথে সাথে নিজের কিডনি দিতে চলে আসে স্যানসম। সবকিছু মিলে গেলে কিছুদিনের ভেতরেই ছুরির নীচে চলে যায় তারা দুজনেই। রিককে কেন কিডনি দিলেন জানতে চাইলে স্যানসম জানান এই আশায় তিনি কাজটি করেছেন যে তার স্বামী কখনো সমস্যায় পড়লে আর কেউও এরকম সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে। আর তার তো দুটো কিডনি ছিল। যেটার একটা অকারণেই পড়েছিল।

তথ্যসূত্র- 10 Amazing Stories Of People Being Saved By Facebook
ফটো ক্রেডিট: www.exposingtruth.com

No comments:

Post a Comment