Ads

Friday, 24 July 2015

আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা ৩


আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
( ৭ )
বায়ুমণ্ডলের স্তর
আবিষ্কার : ১৯০২ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : Leon Philippe Teisserence de Bort


অনেক আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল পৃথিবীর উপরের বায়ুমণ্ডলে একটি মাত্র স্তর আছে । ১৯০২ খ্রী-তে ফরাসী বিজ্ঞানী Leon Philippe Teisserence de Bort পরীক্ষার মাধ্যমে দেখালেন যে বায়ুমণ্ডলে অন্ততঃ দুটো স্তর আছে যাদের নাম তিনি রেখেছিলেন ট্রোপোস্ফিয়ার (Troposphere) এবং স্র্ট্যাটোস্ফিয়ার (Stratosphere) ।
ফিলিপ কাজ করতেন Bureau Central Meteorologique-তে ; কাজ ছেড়ে দেন ১৮৯২ খ্রী-তে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পুরো সময় নিয়োজিত করার জন্য । বায়ুমণ্ডল থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য বেশ কিছু সূক্ষ পরিমাপ যন্ত্র বেলুন-সহযোগে পাঠাতেন একটি বিশেষভাবে নির্মিত হ্যাঙ্গার থেকে এবং তদ্বারা এমন উঁচুতে যেতে পেরেছিলেন যা আগে কখনও হয়নি । দু'শোর মতন বেলুন পাঠিয়েছিলেন তিনি । সংগ্রীহিত তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি দেখলেন বায়ুমণ্ডলে পৃথিবীর উপরে ১১ কিলোমিটার পর্যন্ত তাপমান নিয়মিতভাবে কমে যায় ; তার উপরে তাপমান স্থির থাকে । তিনি তখন বায়ুমণ্ডলকে দুটো স্তরে বিভক্ত করার প্রস্তাব করেন, যা'দের নাম দেন : ট্রোপোস্ফিয়ার এবং স্র্ট্যাটোস্ফিয়ার । পরবর্তীকালে অবশ্য আরও তিনটি স্তর যুক্ত করেন : মেসোস্ফিয়ার (mesosphere), থার্মোস্ফিয়ার (thermosphere) এবং এক্সোস্ফিয়ার (exosphere )।

আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
( ৮ )
আন্তিকিথেরা যান্ত্রিকপদ্ধতি
The Antikythera Mehanism )
আবিষ্কার : ১৯০১ খ্রীষ্টাব্দ
বৈজ্ঞানিক : Valerios Stais, গ্রীস

[প্রায় দু'হাজার বছর পুরাণো 'আন্তিকিথেরা মেকানিজম'-কে বলা হয় বিশ্বের সব থেকে পুরাণো ' এনালগ কম্পিউটার । কিন্তু এর কার্য- প্রণালী বার করতে আধুনিক উন্নতমানের কৃৎকৌশলের প্রয়োজন হয়েছিল ।]

১৯০২ খীষ্টাব্দে গ্রীক প্রত্নতাত্বিক ভ্যালোরিঅস স্টায়িস কিছু শিল্পকর্ম নিয়ে কাজ করছিলেন যা, তিনি আন্তিকিথেরা দ্বীপপুঞ্জের কাছে ডুবে যাওয়া একটি রোমক মালবোঝাই জাহাজ থেকে আবিষ্কার করেছিলেন । এর মধ্যে স্টায়িস দেখতে পেয়েছিলেন একটি বড় মরচে-ধরা ঢেউখেলানো গীয়ার-চক্রাবলী । তা' ছাড়া আরও ৮১টি যন্ত্রাংশ পেয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিল বড় বড় ২৭টি চক্রের দণ্ড । এগুলি যে যন্ত্রের অংশ, মনে হয়, তা' ৩৩ সেণ্টিমিটার উঁচু, ২৭ সে. মি. চওড়া এবং ৯ সে.মি. মোটা, একটি কাঠের ফ্রেমে আরূঢ় ।
প্রথম বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধন করে বৃটিশ ঐতিহাসিক ডেরেক পিয়ার্স্ প্রতিপন্ন করলেন বস্তুগুলির উৎস- গ্রীস এবং সেগুলি জ্যোতির্বিদ্যা-বিষয়ক যন্ত্রের অংশ । পরবর্তীকালে ( ২০০৬ খ্রী ) আরও অনুসন্ধান করে জানা গেল আণ্টিকিথেরা যান্ত্রিকপদ্ধতির রহস্য ।
গ্রীক-ইংরাজ যু±ম বিজ্ঞানীদের দল আরও আধুনিক বিম্ব-প্রয়োগকৌশল (image processing technique) যেমন, ৩-ডাইমেনশন এক্স্-রশ্মি মাইক্রো-ফোকাস টোমোগ্রাফি, ব্যবহার করলো বিভিন্ন যন্ত্রাংশের উপর ; প্রকাশ পেল, যন্ত্রাংশগুলি আগে যা ভাবা গিয়েছিল তার চাইতেও অনেক জটিল । এর মধ্যে আছে গ্রীক রাশিচক্র (Zodiac ), একটি ঈজিপ্টের ক্যালেণ্ডার এবং পিছনের দিকে দুটো ডায়াল যা দেয় নির্ভুল সময়- চান্দ্র-আবর্ত্ (Lunar-cycle) ও গ্রহণগুলির ; এমনকি চন্দ্রের আলোকী-অক্ষপথ planetary motion) -এর জন্য যে গতি পরিবর্তন হয়, তা' প্রতিপুরণ করার ক্ষমতা । তা' ছাড়া প্রমাণ রয়েছে এই যন্ত্র গ্রহিক গতি planetary motion) হিসাবে ধরতে সক্ষম । খ্রী-পূঃ ১০০-১১০ বৎসরে নির্মিত এই যন্ত্র আগামী দশ হাজার বৎসরের যান্ত্রিক বিজ্ঞানকে হার মানিয়েছে ।
লেখক: ডেভিড হক্সেট
defining moments in SCIENCE, pp 29

No comments:

Post a Comment