দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়ায় প্রতিবছর অর্ধ মিলিয়ন মানুষ tuberculosis,
TB বা যক্ষ্মায়
আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তাই ফুসফুসের এই রোগটির বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। যদিও
এটি একটি সংক্রামক রোগ তারপরও আপনি এই রোগটিকে প্রতিরোধ করতে পারেন কঠোর প্রতিরোধ
ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। এটি শুধু রোগের বিস্তারকেই প্রতিরোধ করবে না বরং TB তে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সংখাও কমাবে। যক্ষ্মা এবং এর প্রতিরোধের বিষয়ে জেনে নিই চলুন।
-
TB বায়ুবাহিত একটি রোগ যা সংকটাপন্ন ইমিউন সিস্টেমের মানুষ যেমন- শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী, সম্প্রতি প্রসব করেছেন এমন নারীর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করলে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীদের, ক্যান্সার রোগীদের, HIV পজেটিভ যাদের তাদের হয়ে থাকে।
-
TB রোগে আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকলে
TB হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
-
অ্যালকোহল পান
করেন, মাদক সেবন করেন এবং যাদের শরীরের ওজন
স্বাভাবিকের চেয়ে ১০% কম তাদের যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যক্ষ্মা
প্রতিরোধের উপায়
১। যক্ষ্মায়
আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য এড়িয়ে চলুন
যদি এটি সম্ভব না
হয় তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় প্রতিরোধী মাস্ক ও গ্লাভস পরুন। যদি
আপনি কোন হাসপাতালে কাজ করেন তাহলে ভালো মানের মাইক্রোফিলট্রেশন মাস্ক ব্যবহার
করুন। রোগীর কাছ থেকে আসার পর জীবাণুনাশক পরিস্কারক দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন।
ভিড়, গুমোট পরিবেশ এবং অস্বাস্থ্যকর স্থান
এড়িয়ে চলুন।
২। ইমিউনিটির
উন্নতি ঘটান
আপনার খাদ্য তালিকায়অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করুন। প্রতিদিন তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খান। যদি
এটা সম্ভব না হয় তাহলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করুন চিকিৎসকের
পরামর্শ নিয়ে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেকোন ধরনের রোগ বা স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট ফ্রি
র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে এবং কোষের মেরামতে সাহায্য করে।
৩। প্রোটিন গ্রহণ
করুন
নারীদের প্রতিদিন
৪৬ গ্রাম এবং পুরুষের ৫৬ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিৎ। প্রোটিন কোষের গঠনে এবং
কোষের মেরামতে সাহায্য করে।
৪। পুষ্টি
সম্পন্ন খাবার গ্রহণ করুন
লো –
কার্বোহাইড্রেট ডায়েট অনুসরণ করবেন না। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং ফ্যাট এর সমন্বয় করে খাদ্য গ্রহণ করুন। কারণ
এদের প্রত্যেকেরই ভূমিকা আছে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে।
৫। নিয়মিত ব্যায়াম
করার অভ্যাস তৈরি করুন
সুস্থ থাকার জন্য
ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন। রক্ত সংবহনের
উন্নতি হলে ইমিউনিটিরও উন্নতি হয়।
৬। মেডিটেশন করুন
প্রতিদিন কিছুটা
সময় মেডিটেশন করুন। এর ফলে আপনার প্রাত্যহিক স্ট্রেস কমবে এবং আপনার ইমিউন
সিস্টেমের উপরও প্রভাব ফেলবে।
৭। পরিচ্ছন্ন
থাকুন
বাইরে থেকে আসার
পর বা কোন কিছু খাওয়ার পূর্বে ভালো করে হাত ধোয়াকে উপেক্ষা করেন অনেকেই। সুস্থ
থাকার জন্য ও জীবাণুর সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য এই সহজ ও সাধারণ
অভ্যাসটিকে অবহেলা করা উচিৎ নয়।
৮। শিশুদের টিকা
দিন
যেহেতু নিরাময়ের
চেয়ে প্রতিরোধ করাই ভালো। তাই আপনার সন্তানকে বিসিজি (Bacillus Calmette-Guerin) টিকা দেয়ার ব্যবস্থা
করুন TB এর হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য।
৯। ঔষধের কোর্স
সম্পন্ন করুন
যক্ষ্মায় আক্রান্ত
হওয়ার পর চিকিৎসকের নির্দেশিত ঔষধ গ্রহণ করা মাঝ পথে বন্ধ করে
দিলে যক্ষ্মা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধী রুপ তৈরি হয়। এই রেজিস্টেন্ট
ব্যাকটেরিয়া যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের শরীরে যায় এবং
মাল্টিপল ড্রাগ রেজিস্টেন্ট টিবি (MDR
TB) তে আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তাই
টিবিতে আক্রান্তদের ঔষধের নির্ধারিত কোর্স সম্পন্ন করা উচিৎ।
১০। স্ট্রেসকে
দূরে রাখুন
যক্ষ্মা সহ
বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাকে বৃদ্ধি করে স্ট্রেস। তাই যতটা সম্ভব স্ট্রেস
থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
১১। পর্যাপ্ত ঘুম
প্রয়োজন
অনেককেই ঘুমের
সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। যদিও সুস্থ থাকার জন্য এবং রোগ
প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো প্রয়োজন।
সূত্র: দ্যা হেলথ সাইট ও মায়ো ক্লিনিক
No comments:
Post a Comment